Sunday, December 1, 2013

0 বৌদ্ধধর্মের নতুন তথ্য আবিষ্কার

তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনি। টানা তিনদিনের খননকর্যের পরে বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনি মায়াদেবী মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের মাটি খুঁড়ে শাল বৃক্ষের একটি কান্ডের সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে মায়াদেবী মন্দিরের সঙ্গে মাটিতে চাপা পড়েছিল বলে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা ধারণা করছেন এবং এই অনুসন্ধানী দলের সহপ্রধান যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবিন কানিংহাম বলেন- এখন পর্যন্ত লুম্বিনিতে সবচেয়ে পুরোনো যে বৌদ্ধ অবকাঠামো পাওয়া গেছে, তা খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতকের আগের নয়। সময়টা ছিল সম্রাট অশোকের শাসনামল। আন্তর্জাতিক একটি প্রত্নতাত্ত্বিক দল লুম্বিনিতে মন্দিরের একেবারে কেন্দ্রস্থলে খননকাজ চালায়। ‘এই প্রথম আমরা লুম্বিনিতে এমন একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পেয়েছি, যেখানে খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের একটি অবকাঠামো রয়েছে। বিশ্বে বুদ্ধের এটাই সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন। আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করছি এর মধ্যেদিয়ে বুদ্ধের জন্মতারিখ নিয়ে বিতর্কের অবসান হতে পারে।

যে গাছের কান্ড পাওয়া গিয়েছে ধারণা করা হচ্ছে এটিই শাল বৃক্ষের কান্ড। যে বৃক্ষের কান্ড ধরে রাণী মহামায়া বাপের বাড়ি দেবদহ নগরে যাওয়ার পথে লুম্বিনি কাননে কুমার সিদ্ধার্থকে জন্মদান করেছিলেন।

প্রতিবছর হাজার হাজার বৌদ্ধ তীর্থযাত্রী লুম্বিনিতে যান। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা শাল গাছের কান্ড পাওয়াতে বুদ্ধের প্রকৃত জন্মতারিখ নিয়ে বির্তকের অবসান হবে। বুদ্ধের জন্মতারিখ প্রসঙ্গে আলোচনার সুবিধার্থে ৮ম সংঘরাজ ভদন্ত শীলালংকার মহাথেরো মহোদয় রচিত "আনন্দ" বইয়ের মুখবন্ধ হতে আমি একটি তথ্য উপস্থাপন করছি,
বিগত ১৯৯৫ সালে বুদ্ধজয়ন্তীর সময়ে তথাগত বু্দ্ধের পরিনির্বাণের পর থেকে আড়াই হাজার বর্ষ পূর্তি নিয়ে ভারতে তথ্যবিন্দু পন্ডিতদের মধ্যে এক বির্তকের সৃষ্টি হয়। সে সময়ে অধ্যাপক প্রবোধ চন্দ্র সেন মহাশয় গ্রীসে রক্ষিত চন্দ্র ও সূর্য-গ্রহনের রেকর্ড হতে সিদ্ধার্থের জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ ও মহাপরিনির্বানের তালিকা
" The Statesmens " প্রত্রিকায় যা প্রকাশ করেছিলেন তা হল--
সিদ্ধার্থের জন্ম খ্রিষ্টপূর্ব ৬২৫ অব্দের ৭ই এপ্রিল,
বুদ্ধত্ব লাভ, খ্রিষ্টপূর্ব ৫৯০ অব্দের ১০ই এপ্রিল,
মহাপরিনির্বাণ খ্রিষ্টপূর্ব ৫৪৫ অব্দের ২২শে এপ্রিল।
এবং
২০১১ সালে শ্রীলংকায় অনুষ্টিত বুদ্ধের বুদ্ধত্বলাভের ২৬০০ বৎসর পূর্ণতায় বুদ্ধজয়ন্তীর হিসাবটি নিম্নরূপ-
বুদ্ধত্ব লাভ, খৃষ্টপূর্ব ৫৮৯+২০১১=২৬০০
সুতরাং, বুদ্ধের জন্ম ৫৮৯+৩৫=৬২৪ খ্রিষ্টপূর্ব
এবং বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণ ৫৮৯-৪৫=৫৪৪ খ্রিষ্টপূর্ব
যেহেতু বুদ্ধবর্ষ সন গণনা করা হয় বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের পর হতে, সেহেতু বর্তমান বুদ্ধবর্ষ ৫৪৪+২০১৩=২৫৫৭ বুদ্ধবর্ষ।

আর বর্তমানের এ খনন কার্য প্রমাণ করবে যে সত্য ধর্ম, কতটা গভীর। যা যুগ যুগ ধরে আমরা বৌদ্ধরা আমাদের হৃদয় মন্দিরে স্থান দিয়ে পূজা করে আসছি।
জয় শ্যাক্য পুত্রের জয়, জয় তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের জয়।
এই মহান পূণ্যভুমিকে আমি নতশীরে বন্দনা জ্ঞাপন করতেছি।
 

 কৃতজ্ঞতাঃ বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফাউন্ডেশন।

0 comments:

Post a Comment