এই
নিবন্ধটিতে বুদ্ধের জীবনী এবং বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা
হয়েছে। প্রথমেই আমরা বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা বুদ্ধের জীবনী প্রসংগে আলোকপাত
করছি
জন্ম, শিক্ষা, বিবাহ
সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধের পূর্ব নাম যিনি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। বুদ্ধ শব্দের অর্থ জ্ঞানী। বুদ্ধের জন্ম ৬২৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে। সঠিক জন্মসাল নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে বির্তক থাকলেও সম্প্রতি লুম্বিনিতে আবিষ্কারের ফলে সেই শংসয় দূরীভূত হয়েছে। সিদ্ধার্থের পিতা শুদ্ধোদন ছিলেন শাক্য বংশীয় রাজা। এবং মায়ের নাম মহামায়া। মহামায়া কপিলাবস্তু থেকে পিতার রাজ্য দেবদহে যাবার পথে লুম্বিনি গ্রামে (অধুনা নেপালের অন্তর্গত) সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। তাঁর জন্মের সপ্তম দিনে মায়াদেবীর জীবনাবসান হয়। পরে তিনি বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমী কতৃক লালিত হন। তাঁর জন্মের পর জ্যোতিষিরা তাঁর ৩২ প্রকার মহাপুরুষ লক্ষণ এবং ৮০ প্রকার অনুব্যন্জন চিহ্ন দেখে ভবিষ্যতবাণী করেন হয়তো তিনি সংসার ত্যাগ করে বুদ্ধ হবেন নতুবা রাজচক্রবর্তী হবেন।
যথাসময়ে তিনি নানাবিধ বিষয়ে পারদর্শী হন। গুরুর নিকট তিনি বিবিধ শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। যেমন- বেদ, সাংখ্য, যোগ, ব্যাকরণ, জ্যোতিষশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, শব্দ-প্রকরণ, ছন্দ-প্রকরণ, ইতিহাস, অর্থনীতি ইত্যাদি। যুদ্ধ বিদ্যায়ও তিনি পারদর্শী ছিলেন। অশ্বারোহন ও রথ চালনায় কেউ তাঁর সমকক্ষ ছিল না।
সিদ্ধার্থ গৌতম ছোটবেলা থেকেই বিবিধ বিষয়ে চিন্তাযুক্ত ছিলেন। পিতা শুদ্ধোধন তাঁকে সংসারে আকৃষ্ট করতে তাঁকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাইলেন। ১৬ বছর বয়সে দেবদহের রাজকুমারী যশোধারার (গোপাদেবী) সাথে সিদ্ধার্থের বিয়ে হয়। তাঁর সুখের জন্য তাঁর পিতা শীত-বর্ষা-গ্রীস্ম এই তিন ঋতু অনুযায়ী তিনটি বিলাসবহুল ভবনও নির্মাণ করেন। কিন্তু সিদ্ধার্থের মন ভোগ-সুখে অনাসক্ত ছিল।
মহাভিনিষ্ক্রমণ
একদিন রাজকুমার সিদ্ধার্থ বেড়াতে বের হলে ৪ জন ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রথমে তিনি দেখেন একজন জড়া গ্রস্থ বৃদ্ধ মানুষ, অতঃপর একজন ব্যাধি গ্রস্থ অসুস্থ মানুষ তারপর একজন মৃত মানুষকে দেখতে পান। তিনি তাঁর সারথী ছন্দকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে, ছন্দ তাঁকে বুঝিয়ে বলেন যে এটিই সকল মানুষের নিয়তি। অবশেষে, তিনি দেখা পেলেন একজন সন্যাসীর যিনি মুণ্ডিতমস্তক এবং পীতবর্ণের জীর্ণ বাস পরিহিত। সারথী ছন্দকে এঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন উনি একজন সন্ন্যাসী,
যিনি নিজ জীবন ত্যাগ করেছেন মানুষের দুঃখের জন্য। রাজকুমার সিদ্ধার্থ সেই রাত্রেই ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করেন সংসারে বিদ্যমান দুঃখের মুক্তির জন্য। সেদিন তাঁর পুত্র রাহুল জন্ম নেয়। সংসারের দুঃখ নিথে পরিত্রানের জন্য যাত্রা শুরু করেন সারথী ছন্দকে নিয়ে।প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে অনোমা নদীর প্রান্তে পৌঁছিয়ে তিনি থামলেন। তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেললেন তার লম্বা চুল। অতঃপর ছন্দকে বিদায় জানিয়ে যাত্রা শুরু করলেন মুক্তির জ্ঞানান্বেষণে, মাত্র ২৯ বছর বয়সে। জগতের দুঃখ মুক্তির জন্য সিদ্ধার্থের এই যাত্রাকে বলা হয় মহাভিনিষ্ক্রমণ।
ছবি এবং তথ্যসূত্র:http://nirvanapeace.com
জন্ম, শিক্ষা, বিবাহ
সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধের পূর্ব নাম যিনি বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা। বুদ্ধ শব্দের অর্থ জ্ঞানী। বুদ্ধের জন্ম ৬২৪ খ্রিষ্ট পূর্বাব্দে বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে। সঠিক জন্মসাল নিয়ে পন্ডিতদের মধ্যে বির্তক থাকলেও সম্প্রতি লুম্বিনিতে আবিষ্কারের ফলে সেই শংসয় দূরীভূত হয়েছে। সিদ্ধার্থের পিতা শুদ্ধোদন ছিলেন শাক্য বংশীয় রাজা। এবং মায়ের নাম মহামায়া। মহামায়া কপিলাবস্তু থেকে পিতার রাজ্য দেবদহে যাবার পথে লুম্বিনি গ্রামে (অধুনা নেপালের অন্তর্গত) সিদ্ধার্থের জন্ম দেন। তাঁর জন্মের সপ্তম দিনে মায়াদেবীর জীবনাবসান হয়। পরে তিনি বিমাতা মহাপ্রজাপতি গৌতমী কতৃক লালিত হন। তাঁর জন্মের পর জ্যোতিষিরা তাঁর ৩২ প্রকার মহাপুরুষ লক্ষণ এবং ৮০ প্রকার অনুব্যন্জন চিহ্ন দেখে ভবিষ্যতবাণী করেন হয়তো তিনি সংসার ত্যাগ করে বুদ্ধ হবেন নতুবা রাজচক্রবর্তী হবেন।
যথাসময়ে তিনি নানাবিধ বিষয়ে পারদর্শী হন। গুরুর নিকট তিনি বিবিধ শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। যেমন- বেদ, সাংখ্য, যোগ, ব্যাকরণ, জ্যোতিষশাস্ত্র, তর্কশাস্ত্র, শব্দ-প্রকরণ, ছন্দ-প্রকরণ, ইতিহাস, অর্থনীতি ইত্যাদি। যুদ্ধ বিদ্যায়ও তিনি পারদর্শী ছিলেন। অশ্বারোহন ও রথ চালনায় কেউ তাঁর সমকক্ষ ছিল না।
সিদ্ধার্থ গৌতম ছোটবেলা থেকেই বিবিধ বিষয়ে চিন্তাযুক্ত ছিলেন। পিতা শুদ্ধোধন তাঁকে সংসারে আকৃষ্ট করতে তাঁকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাইলেন। ১৬ বছর বয়সে দেবদহের রাজকুমারী যশোধারার (গোপাদেবী) সাথে সিদ্ধার্থের বিয়ে হয়। তাঁর সুখের জন্য তাঁর পিতা শীত-বর্ষা-গ্রীস্ম এই তিন ঋতু অনুযায়ী তিনটি বিলাসবহুল ভবনও নির্মাণ করেন। কিন্তু সিদ্ধার্থের মন ভোগ-সুখে অনাসক্ত ছিল।
মহাভিনিষ্ক্রমণ
একদিন রাজকুমার সিদ্ধার্থ বেড়াতে বের হলে ৪ জন ব্যক্তির সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। প্রথমে তিনি দেখেন একজন জড়া গ্রস্থ বৃদ্ধ মানুষ, অতঃপর একজন ব্যাধি গ্রস্থ অসুস্থ মানুষ তারপর একজন মৃত মানুষকে দেখতে পান। তিনি তাঁর সারথী ছন্দকে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করলে, ছন্দ তাঁকে বুঝিয়ে বলেন যে এটিই সকল মানুষের নিয়তি। অবশেষে, তিনি দেখা পেলেন একজন সন্যাসীর যিনি মুণ্ডিতমস্তক এবং পীতবর্ণের জীর্ণ বাস পরিহিত। সারথী ছন্দকে এঁর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বলেন উনি একজন সন্ন্যাসী,
যিনি নিজ জীবন ত্যাগ করেছেন মানুষের দুঃখের জন্য। রাজকুমার সিদ্ধার্থ সেই রাত্রেই ঘুমন্ত স্ত্রী, পুত্র, পরিবারকে নিঃশব্দ বিদায় জানিয়ে রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করেন সংসারে বিদ্যমান দুঃখের মুক্তির জন্য। সেদিন তাঁর পুত্র রাহুল জন্ম নেয়। সংসারের দুঃখ নিথে পরিত্রানের জন্য যাত্রা শুরু করেন সারথী ছন্দকে নিয়ে।প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে অনোমা নদীর প্রান্তে পৌঁছিয়ে তিনি থামলেন। তলোয়ার দিয়ে কেটে ফেললেন তার লম্বা চুল। অতঃপর ছন্দকে বিদায় জানিয়ে যাত্রা শুরু করলেন মুক্তির জ্ঞানান্বেষণে, মাত্র ২৯ বছর বয়সে। জগতের দুঃখ মুক্তির জন্য সিদ্ধার্থের এই যাত্রাকে বলা হয় মহাভিনিষ্ক্রমণ।
বোধিলাভ
দুঃখ,
দুঃখের কারণ, দুঃখের নিরোধ এবং নিরোধের উপায় সম্বন্ধে জানতে সিদ্ধার্থ
তাঁর যাত্রা অব্যাহত রাখেন। প্রথমে তিনি স্বনামধণ্য তপস্বী আলাড় কালামের
কাছে যান। তাঁর শিক্ষায় মুক্তিমার্গের সন্ধান না পেয়ে তিনি যান রামপুত্র
উদ্দকের
নিকট। কিন্তু এখানেও কোনও ফল পেলেন না। এভাবে কিছু দিন যাবার পর তিনি মগধের নিরন্জনা নদীর তীরে উরুবেলা নামক স্থানে গমন করেন।
প্রথম দিকে তিনি তথায় খাদ্য গ্রহণ বিহীন কঠোর সাধনা করেন। কঠোর সাধনার ফলে তাঁর শরীর ক্ষয়ে যায়। কিন্তু এ তপস্যায় তিনি ভয়, লোভ ও লালসাকে অতিক্রম করে নিজের মনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হননি। সহসা তিনি বুঝতে পারলেন এভাবে বোধিলাভ হবে না। কথিত আছে, এসময় দেবরাজ ইন্দ্র তিনটি তারের বীণা বাজান।
প্রথম তারের সুর ছিল অতি চিকন সুর সম্পন্ন এবং শ্রুতি মধুর নয়। মধ্যমটি কোমল এবং শ্রুতি মধুর কিন্তু শেষেরটিও শ্রুতিমধুর ছিল না। এতে তিনি বুঝতে পারলেন মধ্যম পন্থায় সঠিক পথ। যদি তিনি অনাহারে কঠোর অথবা অতি আহারে সামান্য সাধনা করেন তাতে মুক্তি অর্জিত হবে না। বুঝতে পারলেন মধ্যম পন্থায় সঠিক পথ। তাই তিনি তাই আবার খাদ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। সুজাতা নাম্নী এক নারীর কাছ থেকে তিনি এক পাত্র পায়সান্ন আহার করলেন। অতঃপর তিনি নদীতে স্নান করে পুনরায় ধ্যানরত হন। অবশেষে সে রাতের বৈশাখী পূর্ণিমায় তিনি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হলেন। এ ঘটনাটিই বোধিলাভ নামে পরিচিত।
নিকট। কিন্তু এখানেও কোনও ফল পেলেন না। এভাবে কিছু দিন যাবার পর তিনি মগধের নিরন্জনা নদীর তীরে উরুবেলা নামক স্থানে গমন করেন।
প্রথম দিকে তিনি তথায় খাদ্য গ্রহণ বিহীন কঠোর সাধনা করেন। কঠোর সাধনার ফলে তাঁর শরীর ক্ষয়ে যায়। কিন্তু এ তপস্যায় তিনি ভয়, লোভ ও লালসাকে অতিক্রম করে নিজের মনের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ লাভ করতে সক্ষম হননি। সহসা তিনি বুঝতে পারলেন এভাবে বোধিলাভ হবে না। কথিত আছে, এসময় দেবরাজ ইন্দ্র তিনটি তারের বীণা বাজান।
প্রথম তারের সুর ছিল অতি চিকন সুর সম্পন্ন এবং শ্রুতি মধুর নয়। মধ্যমটি কোমল এবং শ্রুতি মধুর কিন্তু শেষেরটিও শ্রুতিমধুর ছিল না। এতে তিনি বুঝতে পারলেন মধ্যম পন্থায় সঠিক পথ। যদি তিনি অনাহারে কঠোর অথবা অতি আহারে সামান্য সাধনা করেন তাতে মুক্তি অর্জিত হবে না। বুঝতে পারলেন মধ্যম পন্থায় সঠিক পথ। তাই তিনি তাই আবার খাদ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলেন। সুজাতা নাম্নী এক নারীর কাছ থেকে তিনি এক পাত্র পায়সান্ন আহার করলেন। অতঃপর তিনি নদীতে স্নান করে পুনরায় ধ্যানরত হন। অবশেষে সে রাতের বৈশাখী পূর্ণিমায় তিনি বুদ্ধত্বপ্রাপ্ত হলেন। এ ঘটনাটিই বোধিলাভ নামে পরিচিত।
মহাপরিনির্বাণলাভ
বুদ্ধত্বলাভের
পর ৪৫ বৎসর তিনি ধর্মপ্রচার করেন। সমস্ত জীবন ধরে তাঁর দর্শন এবং বাণী
প্রচার করে অবশেষে আনুমানিক ৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ৮০ বছর বয়সে বৈশাখী
পূর্ণিমা তিথিতে কুশীনগরে ভগবান তথাগত মহাপরিনির্বাণলাভ করেন।
0 comments:
Post a Comment