আজ
সন্ধ্যায় আমরা দন্তধাতু বিহারের অধ্যক্ষ আসগিরিয় মহানায়ক থেরোর সাথে
সাক্ষাৎ করি। তাকে বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘরের মহাপরিচালক মি. প্রকাশ চন্দ্র
দাস যাদুঘরের শতবর্ষ স্মারক উপহার দেন। আমি তার সাথে কথা বলি এবং নিজেকে
বৌদ্ধ বলে পরিচয় দেওয়ায় তিনি আনন্দিত হল। আমি ঢাকার ধর্মরাজিক বৌদ্ধ
মহাবিহারে শ্রীলংকার দুই রাষ্ট্রপতি মি. জয়াবর্ধনে ও মি. প্রেমাদাসা এবং
দুই প্রয়াত সংঘনায়ক কোসগোডা ধর্মবংশ ও ড. তালালে ধর্মানন্দ মহাথেরের
শুভাগমনের কথা জানাই। সে সাথে শ্রীলংকার বৌদ্ধদের সথে বিহারের নৈকট্যের কথা
জানাই। তিনি বলেন ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার সম্পর্কে তিনি জানেন-তাকে
বিহার পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রন জানাই। তিনি সূত্রপাঠের মাধ্যমে আমাদের
আশীর্বাদ করেন। সে সময় তাপস ভিক্ষুও ছিল। সে সিংহলী ভাষায় আমাদের শ্রীলংকা
আগমন সম্পর্কে বলেছে।
তারপর আমরা দু-একটি সুপার মার্কেটে গেলাম। আমি একটি সানগ্লাস কিনলাম। পরে KFC তে গিয়ে কিছু খেলাম। অর্থ্যাৎ রাতের খাবার শেষ করে নিলাম। তারপর দিন সকালে কাজ থাকায় ভিক্ষু তাপস রাত আটটার বাসযোগে কলম্বো ফিরে আসে। ক্যান্ডি আকর্ষনীয় শহর আবহাওয়া মনোরম। ভাল ভাল বিপনি আছে।
৬ই এপ্রিল প্রাতঃরাশের পর আমরা নিউরালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। এটা একটি পর্যটন শহর। মনোরম হৃদের পারে এই শহর গড়ে উঠেছে। বহু আকর্ষনীয় হোটেল-রাতে থাকার সু-ব্যবস্থা আছে। রাস্তা থেকে হৃদ দেখা যায় কিন্তু প্রবেশ করতে হলে সম্মানী দিতে হয়। হৃদে স্পীডবোটে করে ভ্রমন করা যায়। দর্শনীয় বিনিময়ে খুবই আকর্ষনীয় স্থান। এখানে আসার পথে দুএকটি পাহাড়ী ঝরনা দেখলাম খুবই নান্দনিক। ঝরনার মধ্যে রামবাদা জলপ্রভাত খুবই আকর্ষনীয়-আমরা মূল সড়ক থেকে একটু নীচে নেমে সেটা উপভোগ করলাম। একে ঘিরে হোটেলও গড়ে উঠেছে। থাকা খাওয়ার দুয়েরই ব্যবস্থা অনুপম। ক্যান্ডি থেকে কিছুদূর আসার পর অন্য রাস্তা ধরেই আসতে হয়। সমস্ত পথ পার্বত্যময় চমৎকার। এই উঁচু পাহাড়ের পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা হবে এক হাজার ফিট। রাস্তা খুবই মজবুত। পথে পথে হাজারো চায়ের দোকান দেখলাম। রাস্তার ধারে কচি ডাব বিক্রি হচ্ছে-শাকসবজি। মি. শাকিল জানায় শ্রীলংকায় সবজির দাশ বেশী। সে তার বাসার জন্য সবজী কিনে নিল। রাস্তাটি সর্পিল। আমাদের সহযাত্রী কংকন আসা যাওয়ার পথে তিনচারবার বমি করল। আমারও এক সময় বমিবমি ভাব হয়েছিল। সে মনোরম স্থান পরিদর্শন করে আমরা ক্যান্ডি হয়ে কলম্বোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। পথে ক্যান্ডি পেরিয়ে কলম্বো রোড এর একটি রেষ্টুরেন্ট এ দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। কংকন বমির ভয়ে কোক ছাড়া কিছুই খেলনা। আমরা ভাত, ডাল, সবজী ও মমলেট খেলাম। রান্না ভালই ছিল।
তারপর চলে এলাম মাননীয় হাইকমিশনারের বাসায়। বাসার সামনে ফটকে রয়েছে ব্রোঞ্জের শাপলা প্রতীক। ঘরে প্রবেশ করেই গেলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। পুলকিত হলাম। মাননীয় হাইকমিশনার আমাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। যাদুঘরের মহাপরিচালক মি. প্রকাশ চন্দ্র দাস তাকে আমাদের শ্রীলংকা যাদুঘরের প্রতিনিধিদলের সাথে আলোচনার বিস্তারিত জানালেন এবং ঐ যাদুঘরের জন্য আমরা যে সমস্ত ছবি, মানচিত্র ও অন্যান্য জিনিস এনেছি তা তার হাতে তুলে দিলেন। আমরা মাননীয় হাইকমিশনার সাহেবকে অনুরোধ করি আমাদের সরকারকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। অনুরোধ করি যাতে যাদুঘরের বাংলাদেশ গ্যালারীকে আকর্ষনীয় ভাবে সাজানোর জন্য বেশী অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তিনি আমাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তার সুপারিশ গুলিও তুলে ধরেন। আমাদের আশা ২০১৩ সালের নভেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশ গ্যালারীকে পরিপূর্ণভাবে সাজানো সম্ভব হবে যদি অর্থ পাওয়া যায়।
মাননীয় হাইকমিশনার সাহেবের বাসায় ভিক্ষু তাপস এসেছিল। সে জানায় কলম্বোর সন্নিকটে একটি বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। একে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য শ্রীলংকা সরকারের কাছে জমি চেয়েছে। আমি আমাদের রাষ্ট্রদূত মহোদয়কে এ ব্যাপারে সহযোগীতার আবেদন জানাই। তিনি আশ্বাস দেন। আগেই লিখেছি বাংলাদেশ দুতাবাসের সাথে ভিক্ষু তাপসের মধুর সম্পর্ক বিরাজমান। তারা সকলেই তাকে জানে। তাপস ভিক্ষুর সাথে তার একজন সিংহলী দায়কও এসেছিল। তাকেও অনুরোধ করি তাপস ভিক্ষুকে সহায়তা দেওয়ার জন্য। আমরা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে আবার পরিচিত হই। পরিচিত হই তাদের স্ত্রী ও পুত্র কন্যাদের সাথে। একদম ঘরোয়া পরিবেশ, যেন এক খন্ড বাংলাদেশ। সেদিন মাননীয় হাই কমিশনার আমাদের রসের পরিবর্তে ডাবের জল দিয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন। তিনি জানান তার বাসার চত্ত্বরে বহু নারিকেল গাছ আছে। বলা প্রয়োজন মি. শাকিল আমাকে চিনতে পেরেছিল আগে। সেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাথে আমার মত রাষ্ট্রীয় সফরে ভিয়েতনাম ও লাউসে গিয়েছিলেন। দূতাবাসের সকলেই আমাকে শিক্ষাবিদ এবং আমার সামাজিক মর্যাদা ছাড়াও আমি আওয়ামীলীগ উপদেষ্ঠা হওয়াতে বেশ সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন। ডিনার ভালই হয়েছিল। মাছ, মাংস, সবজী, ডাল, ভর্তা সবই ছিল। খাওয়ার পর ফল এবং মিষ্টি ছিল। সবশেষে ছিল কফি। এভাবে একটি আনন্দঘন সন্ধ্যা মাননীয় হাইকমিশনার জনাব শফিউর রহমানের বাসভবনে অতিবাহিত করি। রাত ১১টায় অতিথি ভবনে ফিরে আসি।
৭ই এপ্রিল ভোর ৪টায় শয্যা ত্যাগ করি। আজ আমাদের দেশে ফেরার দিন। আমাদের ফ্লাইট হল সকাল ৭.৩০টায়। আমরা ৫ টায় বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি এবং ৪০ মিনিটেই বিমান বন্দরে এসে যাই। দূতাবাসের কর্মী মি. খলিল আমাদের বিমান বন্দরে পৌঁছিয়ে দিয়েছিল এবং আমাদের সাথে বিমানের আরোহন গেইট পর্যন্ত ছিল। খলিলের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছি। সে যেভাবে আমাদের প্রোটোকল দিয়েছিল তা বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। আমরা দুপুর বারোটায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জান্তিক বিমান বন্দরে পেীঁছি। বিকাল তিনটায় আমি ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহারে পৌঁছে যাই।
এই শ্রীলংকা সফর আমার জন্য অন্যরূপে অন্য অভিজ্ঞতায় এক অনন্য ও বৈশিষ্টমন্ডিত সুখস্মৃতির সমৃদ্ধ ভান্ডার।
তারপর আমরা দু-একটি সুপার মার্কেটে গেলাম। আমি একটি সানগ্লাস কিনলাম। পরে KFC তে গিয়ে কিছু খেলাম। অর্থ্যাৎ রাতের খাবার শেষ করে নিলাম। তারপর দিন সকালে কাজ থাকায় ভিক্ষু তাপস রাত আটটার বাসযোগে কলম্বো ফিরে আসে। ক্যান্ডি আকর্ষনীয় শহর আবহাওয়া মনোরম। ভাল ভাল বিপনি আছে।
৬ই এপ্রিল প্রাতঃরাশের পর আমরা নিউরালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। এটা একটি পর্যটন শহর। মনোরম হৃদের পারে এই শহর গড়ে উঠেছে। বহু আকর্ষনীয় হোটেল-রাতে থাকার সু-ব্যবস্থা আছে। রাস্তা থেকে হৃদ দেখা যায় কিন্তু প্রবেশ করতে হলে সম্মানী দিতে হয়। হৃদে স্পীডবোটে করে ভ্রমন করা যায়। দর্শনীয় বিনিময়ে খুবই আকর্ষনীয় স্থান। এখানে আসার পথে দুএকটি পাহাড়ী ঝরনা দেখলাম খুবই নান্দনিক। ঝরনার মধ্যে রামবাদা জলপ্রভাত খুবই আকর্ষনীয়-আমরা মূল সড়ক থেকে একটু নীচে নেমে সেটা উপভোগ করলাম। একে ঘিরে হোটেলও গড়ে উঠেছে। থাকা খাওয়ার দুয়েরই ব্যবস্থা অনুপম। ক্যান্ডি থেকে কিছুদূর আসার পর অন্য রাস্তা ধরেই আসতে হয়। সমস্ত পথ পার্বত্যময় চমৎকার। এই উঁচু পাহাড়ের পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে এর উচ্চতা হবে এক হাজার ফিট। রাস্তা খুবই মজবুত। পথে পথে হাজারো চায়ের দোকান দেখলাম। রাস্তার ধারে কচি ডাব বিক্রি হচ্ছে-শাকসবজি। মি. শাকিল জানায় শ্রীলংকায় সবজির দাশ বেশী। সে তার বাসার জন্য সবজী কিনে নিল। রাস্তাটি সর্পিল। আমাদের সহযাত্রী কংকন আসা যাওয়ার পথে তিনচারবার বমি করল। আমারও এক সময় বমিবমি ভাব হয়েছিল। সে মনোরম স্থান পরিদর্শন করে আমরা ক্যান্ডি হয়ে কলম্বোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করি। পথে ক্যান্ডি পেরিয়ে কলম্বো রোড এর একটি রেষ্টুরেন্ট এ দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। কংকন বমির ভয়ে কোক ছাড়া কিছুই খেলনা। আমরা ভাত, ডাল, সবজী ও মমলেট খেলাম। রান্না ভালই ছিল।
আজকের
দিনটা আমাদের ফ্রি ডে। তাই এ ভ্রমনের ব্যবস্থা। বহুবার শ্রীলংকা এসেছি
কিন্তু এবার হল নতুন অভিজ্ঞতা। অন্যসময় বৌদ্ধ তীর্থ ও ঐতিহ্য দেখেছি এবং
নতুন নতুন শহর দেখেছি। চা বাগান, ঝরনা ও হৃদ দেখেছি। ক্যান্ডিতে
পাহাড়শীর্ষে এক হোটেলে ছিলাম-সেখান থেকে সারা নগরী দেখা যায়। দৃষ্টি পড়লো
দূরে পাহাড়শীর্ষে খোলা আকাশের নীচে নান্দনিক সমাধি বুদ্ধের আকর্ষনীয়
মূর্তি। এই হোটেলে বিদেশী পর্যটক বেশী, বেকফাষ্ট খুবই উন্নত। আজ ৫.৩০ টায়
আমরা কলম্বো পৌঁছলাম। আমাদের জন্য আর একটি অতিথিভবনে থাকার ব্যবস্থা করা
ছিল। সেখানে লাগেজ নামিয়ে ফ্রেশ হয়ে কলম্বো শহর দেখতে বের হলাম। প্রথম এলাম
লংকা জেম হাউসে। আমাদের দুই মহাপরিচালক মুক্তা ও মুক্তার চেইন দেখলেন।
কিন্তু দাম বেশী। তারপর এলাম খঅকঝঅখ নামক বিপনীতে এখানে কভেনির পাওয়া যায়।
আমাদের আড়ৎ এর মতই সেখানে অন্যান্যরা বাজার করল। আমি কয়েকটি চাবির রিং
নিলাম। তারপর এলাম ঙউঊখণ নামক আকর্ষনীয় বিপনী বিতানে। আমি তো কিছুই নিলাম
না। বাকীরা কিছু কিছু কেনাকাটা করলেন। কেনাকাটায় মিসেস শিরীন আখতার এগিয়ে
ছিলেন। তবে বাজার হল খুবই সামান্য।
তারপর চলে এলাম মাননীয় হাইকমিশনারের বাসায়। বাসার সামনে ফটকে রয়েছে ব্রোঞ্জের শাপলা প্রতীক। ঘরে প্রবেশ করেই গেলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। পুলকিত হলাম। মাননীয় হাইকমিশনার আমাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। যাদুঘরের মহাপরিচালক মি. প্রকাশ চন্দ্র দাস তাকে আমাদের শ্রীলংকা যাদুঘরের প্রতিনিধিদলের সাথে আলোচনার বিস্তারিত জানালেন এবং ঐ যাদুঘরের জন্য আমরা যে সমস্ত ছবি, মানচিত্র ও অন্যান্য জিনিস এনেছি তা তার হাতে তুলে দিলেন। আমরা মাননীয় হাইকমিশনার সাহেবকে অনুরোধ করি আমাদের সরকারকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য। অনুরোধ করি যাতে যাদুঘরের বাংলাদেশ গ্যালারীকে আকর্ষনীয় ভাবে সাজানোর জন্য বেশী অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তিনি আমাদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং তার সুপারিশ গুলিও তুলে ধরেন। আমাদের আশা ২০১৩ সালের নভেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশ গ্যালারীকে পরিপূর্ণভাবে সাজানো সম্ভব হবে যদি অর্থ পাওয়া যায়।
মাননীয় হাইকমিশনার সাহেবের বাসায় ভিক্ষু তাপস এসেছিল। সে জানায় কলম্বোর সন্নিকটে একটি বৌদ্ধ বিহার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। একে পূর্ণতা দেওয়ার জন্য শ্রীলংকা সরকারের কাছে জমি চেয়েছে। আমি আমাদের রাষ্ট্রদূত মহোদয়কে এ ব্যাপারে সহযোগীতার আবেদন জানাই। তিনি আশ্বাস দেন। আগেই লিখেছি বাংলাদেশ দুতাবাসের সাথে ভিক্ষু তাপসের মধুর সম্পর্ক বিরাজমান। তারা সকলেই তাকে জানে। তাপস ভিক্ষুর সাথে তার একজন সিংহলী দায়কও এসেছিল। তাকেও অনুরোধ করি তাপস ভিক্ষুকে সহায়তা দেওয়ার জন্য। আমরা দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে আবার পরিচিত হই। পরিচিত হই তাদের স্ত্রী ও পুত্র কন্যাদের সাথে। একদম ঘরোয়া পরিবেশ, যেন এক খন্ড বাংলাদেশ। সেদিন মাননীয় হাই কমিশনার আমাদের রসের পরিবর্তে ডাবের জল দিয়ে আপ্যায়ন করেছিলেন। তিনি জানান তার বাসার চত্ত্বরে বহু নারিকেল গাছ আছে। বলা প্রয়োজন মি. শাকিল আমাকে চিনতে পেরেছিল আগে। সেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাথে আমার মত রাষ্ট্রীয় সফরে ভিয়েতনাম ও লাউসে গিয়েছিলেন। দূতাবাসের সকলেই আমাকে শিক্ষাবিদ এবং আমার সামাজিক মর্যাদা ছাড়াও আমি আওয়ামীলীগ উপদেষ্ঠা হওয়াতে বেশ সম্মান প্রদর্শন করেছিলেন। ডিনার ভালই হয়েছিল। মাছ, মাংস, সবজী, ডাল, ভর্তা সবই ছিল। খাওয়ার পর ফল এবং মিষ্টি ছিল। সবশেষে ছিল কফি। এভাবে একটি আনন্দঘন সন্ধ্যা মাননীয় হাইকমিশনার জনাব শফিউর রহমানের বাসভবনে অতিবাহিত করি। রাত ১১টায় অতিথি ভবনে ফিরে আসি।
৭ই এপ্রিল ভোর ৪টায় শয্যা ত্যাগ করি। আজ আমাদের দেশে ফেরার দিন। আমাদের ফ্লাইট হল সকাল ৭.৩০টায়। আমরা ৫ টায় বিমান বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করি এবং ৪০ মিনিটেই বিমান বন্দরে এসে যাই। দূতাবাসের কর্মী মি. খলিল আমাদের বিমান বন্দরে পৌঁছিয়ে দিয়েছিল এবং আমাদের সাথে বিমানের আরোহন গেইট পর্যন্ত ছিল। খলিলের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছি। সে যেভাবে আমাদের প্রোটোকল দিয়েছিল তা বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয়। আমরা দুপুর বারোটায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জান্তিক বিমান বন্দরে পেীঁছি। বিকাল তিনটায় আমি ধর্মরাজিক বৌদ্ধবিহারে পৌঁছে যাই।
হাইকমিশনের কর্মকর্তারা হলেন:
১। মোহাম্মদ সফিউর রহমান-মাননীয় হাইকমিশনার
২। জনাব বোরহানউদ্দিন-কাউন্সিলার
৩। কমোডোর এম নাসির-প্রতিরক্ষা উপদেষ্ঠা
৪। মি. শাকিল আহমদ-থার্ড সেক্রেটারী
৫। মি. জলিল-প্রটোকল বিভাগ।
১। মোহাম্মদ সফিউর রহমান-মাননীয় হাইকমিশনার
২। জনাব বোরহানউদ্দিন-কাউন্সিলার
৩। কমোডোর এম নাসির-প্রতিরক্ষা উপদেষ্ঠা
৪। মি. শাকিল আহমদ-থার্ড সেক্রেটারী
৫। মি. জলিল-প্রটোকল বিভাগ।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নাম ঃ
১। মি. প্রকাশ চন্দ্র দাস, মহাপরিচালক, জাতীয় যাদুঘর-দলনেতা।
২। মিসেস শিরীন আখতার, মহাপরিচালক, প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ।
৩। ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, মহাসচিব, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ।
৪। মি. কংকন বড়ুয়া, অফিসার, জাতীয় যাদুঘর।
১। মি. প্রকাশ চন্দ্র দাস, মহাপরিচালক, জাতীয় যাদুঘর-দলনেতা।
২। মিসেস শিরীন আখতার, মহাপরিচালক, প্রত্মতত্ত্ব বিভাগ।
৩। ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, মহাসচিব, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ।
৪। মি. কংকন বড়ুয়া, অফিসার, জাতীয় যাদুঘর।
পর্যটন
শহর নিওরালি থেকে কলম্বো ফেরার পথে আমরা পথের ধারে গাড়ী থামিয়ে কচি ডাবের
জল ও সাস খেলাম। বেশ সুস্বাদু। গাড়ী চলার সময় আমরা নিজেদের মধ্যে ভাববিনিময়
করি। জাতীয় যাদুঘর ও প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালকদ্বয় তাদের কর্মজীবন ও
বিদেশ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। দুজনেই দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং সার্থক
উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা। আমাদের যে দম্পতি ডাবের জল কেটে দিয়েছিল তারা
ইংরেজীতে আমাদের সাথে কথা বলল। শ্রীলংকায় কমবেশী সকলেই ইংরেজীতে কথা বলতে
পারে। রাস্তাগুলি খুবই ভাল গাড়িতে হর্ণ বাজাতে হয় না। সকলে ট্রাফিক আইন
মেনে চলে। ওভারটেইকিং কম বললেই চলে। আমাদের গাড়ীর চালক ছিল একজন সুদর্শন
সিংহলী যুবক। সে মাঝে মাঝে বিভিন্ন স্থানের বর্ণনা দিয়েছিল। কলম্বো
ক্যান্ডি মহাসড়কের মধ্যখানে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শ্রীমাভো বন্দর নায়কের
সমাধি আছে।
শ্রীলংকা
বৌদ্ধ প্রধান দেশ। বৌদ্ধধর্ম ছাড়া ও এখানে হিন্দুধর্ম, ইসলামধর্ম,
খৃষ্টধর্ম ও রয়েছে। চমৎকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিদ্যামান। ভারতের
বুদ্ধগয়ার পবিত্র বোধিবৃক্ষটি ধ্বংসের সেখানে নতুনভাবে যে বৃক্ষটি জন্মেছিল
তারই একটি পবিত্র শাখা শ্রীলংকার অনুরাধা পুরে আনা হয়-তা খুবই ঐতিহাসিক
এবং শ্রীলংকার পবিত্র সম্পদ। পূর্বে আমি বহুবার অনুরাধাপুর ভ্রমন করেছি।
ক্যান্ডিতে আছে মহামতি বুদ্ধের পবিত্র দন্তধাতু। এটা বছরে একবার হাতির পিঠে
চড়িয়ে নগর পরিক্রমা করে ভক্তগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। অন্যসময়
রাষ্ট্রীয় অতিথিদের দেখানো হয় বিশেষ ব্যবস্থায়। এই দন্তধাতু বিহারে
প্রতিদিন সকালে পূজা হয়-বিকেলে উপসনা হয় এতে হাজারো নরনারী সমাগম হয়। এবার
আমার দন্তধাতু দেখার সৌভাগ্য হয়নি তবু ধাতুমন্দির প্রদক্ষিণ করেছি এবং বাইর
থেকে বন্দনা করেছি। যে হাতির পিঠে চড়িয়ে দন্তধাতু নগর পরিক্রমা করত-সে
হাতি মারা যায়-একটি হাতির মূর্তি মন্দিরের সামনে তৈরি হয়েছে। দর্শনার্থীরা
তাকেও শ্রদ্ধা করে। সে ষাট বছর এ কাজ করেছিল। প্রতি বছরের দন্তধাতু
প্রদর্শনীর সময়ে যে উৎসব হয় তার নাম ‘পেরেহারা’ উৎসব। সারা ক্যান্ডি সাজানো
হয়-পথে পথে উৎসব। বিদেশীরাও তখন ক্যান্ডি আসে। ক্যান্ডির আকর্ষণ হলো একটি
লেইক। পার্বত্যময় শহর। পাহাড়ের গায়ে গায়ে ভবন। শ্রীলংকায় ডাম্বুলায়
গুহামন্দির আছে সিগিরিয়ায় পাহাড় গাত্রে মনোরম ফ্রেসক্ ো আছে। পোলরান্নভায়
পাথরের আকর্ষনীয় বুদ্ধমূর্তি আছে। তথাগত বুদ্ধ শ্রীলংকা গিয়েছিলেন এবং
কলম্বোর অদূরে কেলেনিয়া বৌদ্ধমহাবিহারে অবস্থান করেছিলেন। শ্রীলংকার
মিহিনতল নামক স্থানে সিংহলীরাজা দেবানং প্রিয়তিসস সম্রাট অশোকপুত্র ভিক্ষু
মহেন্দ্রের কাছে বৌদ্ধধর্ম গ্রহন করেন-উল্লেখ্য যে অশোক কন্যা সংঘামতী ভারত
থেকে বোধিচারা শ্রীলংকায় নিয়ে আসেন। এছাড়া ভারতের উড়িষ্যা থেকে রাজন্যা
অনিলা দন্তধাতুু শ্রীলংকায় এনেছিলেন। শ্রীলংকার এককালীন নাম সিংহল। বাংলার
রাজপুত্র বিজয় সিংহ সিংহল জয় করেছিলেন-সেই দিনে যেই দিন গৌতম বুদ্ধ
মহাপরিনির্বান লাভ করেন। শ্রীলংকায় পাহাড়শীর্ষে বুদ্ধের পদচিহ্ন আছে।
শ্রীলংকা
বৌদ্ধ ধর্মদর্শন চর্চার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এখানে বিশ্বখ্যাত
বিদ্যালংকার ও বিদ্যোদয় বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সিংহলের সিংহপুরুষ আগারিক
ধর্মপাল ভারতের প্রাচীন বৌদ্ধঐতিহ্য আবিস্কার ও উদ্ধারে গৌরবময় ভূমিকা পালন
করেন। কলম্বোতে ১৯৫০ সালে বিশ্ব বৌদ্ধ সৌভ্রাতৃত্ব সংঘ (WFB) প্রতিষ্ঠিত
হয়। বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ তার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
এই ভ্রমনে
শ্রদ্ধেয় মি. প্রকাশচন্দ্র দাস মহাপরিচালক জাতীয় যাদুঘর বরাবরই আমার
খোঁজখবর নিয়েছিলেন। প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের শ্রদেয় মহাপরিচালক মিসেস শিরিন
আখতার ও সহযোগিতার হস্ত প্রসারিত করেছিলেন। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
যাদুঘরের অফিসার কংকন বড়–য়া আমার ভাগিনা পরমআত্মীয়-সে আমার সুখ ও
স্বাচ্ছন্দের জন্য সবসময় তৎপর ছিল। আমরা তিনদিনের যেন একই পরিবারের সদস্য
হয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের মনের, চিন্তার, ভাবের ও আদর্শের মিল ছিল বলেই আমরা
সহজেই একে অপরের খুব কাছাকাছি এসেছি। একে অপরের দ্বারা উপকৃত হয়েছি। এই
ভ্রমন আমার অক্ষয় স্মৃতি হয়ে থাকবে।এই শ্রীলংকা সফর আমার জন্য অন্যরূপে অন্য অভিজ্ঞতায় এক অনন্য ও বৈশিষ্টমন্ডিত সুখস্মৃতির সমৃদ্ধ ভান্ডার।
কৃতজ্ঞতাঃhttp://www.nirvanapeace.com
0 comments:
Post a Comment